Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Hover Effects

Months

{fbt_classic_header}

Breaking News:

latest

Madhupur Deoghar Tarapith Travel Guide – Things You Need To Know | bongtraveller.com

ঘুরে এলাম বাঙালীর অতিপরিচিত ৩ জায়গা – মধুপুর, দেওঘর, তারাপীঠ।ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপের দৌলতে এখন সবাই জানেন এগুলোর আশেপাশের দর্শনীয় স্থান  গুলোর কথা।তাই আমি সেদিকে না গিয়ে একটু অন্য ভাবে লিখি কিছু।
#মধুপুর
প্রথমেই বলে রাখি যারা ডায়েট কন্ট্রোল করছেন ভুলেও যাবেন না।দ্বিগুন খেয়েও শুধু দুই গ্লাস জল।ঘন্টা খানেক পর আপনার পেট আবার খাবার-খাবার করবে।একটা উদাহরণ স্বরুপ আমি বাড়িতে জলখাবারে ৪ টি লুচি রাতে ৪টি রুটি খাই।এখানে ২ টোই ছিল দ্বিগুন।সন্ধ্যা ৭ টায় ৪ টি সিঙারা আর ১০/- পিঁয়াজি খেয়ে রাত ৯ টায় আবার পেট হুহু করে উঠলো। জেনুইন কচি পাঁঠা আর মুরগী চাইলে চোখ বুঁজে চলে যাওয়া যায়।মাংস মুখে দিলে গলে যায় শুনেছিলাম, উপলব্ধি করলাম খেয়ে।রান্না খুব হালকা।যাদেরমশলাদার খাবার পছন্দ তারা কিন্তু হতাশ হতে পারেন।সব্জি সব টাটকা একদম।বাগানের লাউ, কপি, আমড়া দিয়ে রান্না হয়।কোনো সারের ব্যাবহার নেই। ফেলে দেওয়া শাল পাতা,খাবার এইসব পচিয়ে সার হয়।
এবার আসি থাকার জায়গার কথায়।লীলা কমলটা কিন্তু হোমস্টে।সিকিম বা নর্থবেঙ্গলের প্রফেশানাল হোমস্টেগুলোর সঙ্গে গুলিয়ে ফেলবেন না।রুম সার্ভিস নামক বস্তুটি আশা করবেন না।কাজের মহিলা আসেন রোজ।ওনাকে বললে ঘর বাথরুম পরিষ্কার করে দেবেন।চা বাদে ঘরে কিছু দেবে না।কাপ গুলো নিজে রান্না ঘরে দিয়ে আসা ভালো।আগের দিন বলে দিতে হবে কি খাবেন ৪ বেলা। সেই হিসেবে দিনের দিন বাজার হয়।অতিরিক্ত আইটেম পাবেন না।কোনো ফাস্ট ফুড পাবেন না চপ পাকোড়া ছাড়া।মাছের সাইজ খুবই বড়ো।চিকেন আর মাটন 2 পিস।অতিরিক্ত খেতে চাইলে আগে বলে দিতে হবে।সকালে লুচী বা রুটি। দুপুরে মাছ, রাতে চিকেন বা মটন। রুম ২ টা সব থেকে বড় আর সুন্দর।এই ঘরে থাকা খাওয়া ৮০০/- জনপ্রতি। গীজার আছে ।সব রুমে গীজার নেই। রান্নাঘর থেকে আনতে হবে।দোতলায় কিছু ঘরে বাথরুম ঘরের বাইরে।এগুলোত ৬০০/- জনপ্রতি। বাকী গুলো ৭০০/- জনপ্রতি। দিনের ১০ ঘন্টা প্রায় কারেন্ট থাকে না।ইনভারটার আছে, রুমপ্রতি১টাআলো।সন্ধ্যা বেলা জেনারেটর চলে।
স্টেশন থেকে খানিকটা দূর।অটো, টোটো আছে। বললে গাড়ীও পাঠিয়ে দেন।প্রায় ১ বিঘা জায়গা নিয়ে বাড়ী।প্রচুর ফুল ফল এর গাছ সারা বাড়ীতে।সবজী চাষ ও হয় অনেক।চাইলে ঘি আনতে পারেন বাড়ীতে করা। ওই জিনিষ কলকাতাতে কোনো ভাবেই পাবেন না।বাড়ী থেকে ২ মিনিট হা্ঁটলে মেন রোড।ওখানে চা, মুড়ি, চপ, মিষ্টি পাবেন।লিকার চা ব্যাপার টাই নেই। সব জল ছাড়া ঘন দুধের চা।মিষ্টি খেতে ভুলবেন না বিশেষ করে সন্ধ্যা বেলার গরম রসগোল্লা, পান্তুয়া আর রাবরী।
দর্শণীয় বলতে গিরিডি আর অসংখ্য পড়ে থাকা ভাঙ্গা বাড়ী।যেখানে ইচ্ছে ঢুকে পড়ে ঘুরুন।কেয়ারটেকার আর মালিরা হাসিমুখে ঘুরিয়ে দেখাবে, সুখ দুঃখের কথা বলবে।যেই বাড়ীগুলো তে কেউ নেই, ভাঙ্গা দরজা জালনা টপকে ঢুকে যান, কেউ কিছু বলবে না।সারা দিন ঘুরুন পায়ে হেঁটে।সন্ধ্যা বেলা বিবেকানন্দ আশ্রম বা কপিল মুণির আশ্রমে প্রার্থণা শুনুন, মন ভালো হয়ে যাবে।ইউরো কিডস্স্কুলের পাশের রাস্তা দিয়ে একটু গেলেই রেশম গুটি চাষের জায়গা।দেখে আসতেই পারেন।
ঘোরার গাড়ী বা টোটো যাদের দরকার মুকুলবাবুকে বললেই ব্যাবস্থা  করে দেবেন। অত্যন্ত ভালো মানুষ আর ভীষণ সাহায্য করেন সব কিছুতে।সারাদিন গিরিডি ঘোরার ছোটো গাড়ী ১৭০০-১৮০০/-, বলেরো টাইপ ২২০০/- , স্করপিও ২৫০০/-।স্টেশন থেকে অটো-টোটো৫-১০/- যা হয় চক অবধি।রিক্সা ৩০/-, টোটো পুরো ৫০/-, স্করপিও ১৫০/-।দেওঘর ছেড়ে দেওয়া স্করপিওতে ১৫০০/-, বলেরো ১২০০/-, অটো ৬০০/-।স্টেশন থেকে ঘোরার জন্য গাড়ী নিলে ১০০-২০০/- কম হতে পারে, কিন্তু মিসগাইডেড হবার সম্ভাবনা খুব বেশী।
#দেওঘর – তারাপীঠ
প্রথমেই বলে রাখি, আমার মতন যারা প্যাঁড়া আর রাবড়ির লোভে দেওঘর যাবেন, তারা কিন্তুহতাশ হবেন।ছোটো বেলায় দেখা আর বাবা-মার থেকে শোনা কাঠের আগুনে বড় লোহার কড়া তেকাঠের হাতা দিয়ে পাক দেওয়া গরম রাবড়ি শাল পাতায় তুলে খাওয়া এখন ধুসর অতীত।হয়ত কোথাও আছে , আমি খুঁজে পাইনি।হোটেল যাত্রিক এর পাশ দিয়ে মন্দিরে যাওয়ার রাস্তার দুদিকের প্যাঁড়া রাবড়ীর দোকান গুলো আজ শাড়ী-চুড়ি- লোহার বাসনের দোকানে পরিনত হয়েছে সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে।প্যাঁড়া গলিতে কিছু দোকান আছে বটে, তবে তাদের কোয়ালিটি পূজো দেওয়ার মতন।খানিকটা ভালো কোয়ালিটি পাবেন ত্রিকূট পাহাড় যাবার রাস্তায় দূর্গা ধাবাতে।এদের খাবারটাও বেশ ভালো।
দেখার যায়গা নিয়ে নতুন করে কিছু বলছি না।তপোবন আর ত্রিকূট পাহাড়ে বাঁদর আর স্থানীয় লোকের  উৎপাত আছে।হাতে কিছু রাখবেন না ।তপোবনে গাইড লাগে না।ওঠার শুরুতে স্থানীয়রা ভয় দেখায় ।১০/ - নিয়ে হাতে বাঁদরের খাবার ধরাতে চাইবে।উপেক্ষা করা ভালো।নন্দন পাহাড় একটা পার্ক।দেখার কিছু নেই।তবে বাচ্ছাদের ভালো লাগবে।ত্রিকূট পাহাড়ে হেঁটে ওঠা যায়।গাইড নেওয়া ভালো।তবে যারা পাহাড় ভালোবাসেন বা চেনেন, গাইড ছাড়াই যেতে পারবেন। ঝাড়খন্ড সরকার কেনো যে এই গাইড সেক্টরটা কে সংগঠিত করেনি জানিনা।করলে হয়ত দুপক্ষের সুবিধা হতো।হেঁটে না পারলে রোপওয়ে আছে।১৩০/- ওপর-নীচ।১ ঘন্টা সময় থাকার।ওপরে বিশেষ কিছু নেই।হেঁটে ওঠাটাই থ্রীল।
বাবা ধাম এখন ব্যাবসার জায়গা।পান্ডা ছাড়া পূজো দেওয়া প্রায় অসম্ভব।কথার ছলে ভুলিয়ে এদিকও দিক করে টাকা বের করে আনাটা ওনাদের বড় গুন বলা যায়।বাবার ঘরে ঢোকার মুখেই একজন দাঁড়িয়ে।মাথাপিছু ১০/- না দিলে ঢুকতে না দেওয়াটাই ওনার কাজ।অবশ্য এটা তারাপীঠএও আছে ।বাবা ঠাকুর ধরনের লোকজনের ওপর আমার বিশেষ ভক্তি নেই, তাই সৎ সঙ্গ আশ্রম নিয়ে কিছু বলার নেই, তবেজায়গাটা well maintained।গাড়ীতে তারাপীঠ গেলে বা দেওঘর থেকে ৫০কিমি দূরে বাসুকিনাথমন্দির দেখতে পারেন।
এবার আসি থাকার কথায়।দেওঘরে থাকার সব থেকে ভালো যায়গাটা ওয়ার চক।এখান থেকে মন্দির দোকান পাট খুব কাছে।অনেক হোটেল এই চত্বরে - যাত্রিক, কার্তিক, রাজ, যশোদা ইত্যাদি।আমি যশোদায় ছিলাম।মোটা মুটি ভালোই হোটেল, রক্ষণাবেক্ষণ এর কিছুটা অভাবআছে।এদের নিজেদের রেস্টুরেন্ট নেই, তবে রুম সার্ভিস আছে।যদিও সেটা বেশ স্লথ প্রকৃতির।
টাওয়ার চক এলাকায় অনেক খাবার দোকান।ভেজ-ননভেজ-চাইনিজ-মুঘলাই সবই পাওয়া যায়। ICICI bank এর পাশে অনামিকা সাধারন খাবারের জন্যে ভালো।যাত্রিক এর পাশের গলিতে ( যেটা মন্দিরে গেছে ) একটা ভালো ভেজ রেস্টুরেন্ট আছে, নাম মনে পড়ছে না।তবে ত্রিকূট যাবার পথে দূর্গা ধাবা বেস্ট।
ঘোরার জন্য ছোটো-বড় অটো পাওয়া যায় অনেক।সকাল সকাল শুরু করলে আশ পাশ সব দেখে তপোবন হয়ে ত্রিকূট চলেযান।যাওয়ার আগে দূর্গাতে খেয়ে নিন। ছোটো অটো ৬০০-৭০০/- বড়ো অটো৮০০-৯০০/-। তবে চায় অনেক।অনেক অটো, দরদাম করে নেবেন।
দেওঘর থেকে চলে গেছিলাম তারাপীঠ। বিকেলে ট্রেন আছে, তবে আমরা গাড়ী করে গিয়েছিলাম।ছোটো গাড়ী ২৫০০-২৬০০/-, বলেরো ২৮০০-২৯০০/-, স্করপিও ৩৩০০/-।সময় লাগে ৩ ঘন্টা মতন ।যাবার পথে মলুটী দেখতে ভুলবেন না।এটা কে টেরাকোটা গ্রাম বলা হয়।এখানেই মৌলিক্ষা মায়ের মন্দিরে বাবা বামা ক্ষ্যাপা প্রথম সিদ্ধিলাভ করেন।তারাপীঠ এর দৌলতে এটি আজ উপেক্ষিত।গাড়ী আপনাকে এই একটা মন্দিরে ই নিয়ে যাবে আর বলবে এখানে কিছু নেই আর। কিন্তু এটা বাদেও আরো ৭১ টা মন্দির আছে।লোকাল কাউকে ধরে বাকি গুলো দেখে নিতে পারেন।তারাপীঠথেকেও আসা যায়।তারাপীঠ থেকে বক্রেশ্বর গেলে রাস্তায় গুড় নিতে ভুলবেন না।একদম টাটকা খাঁটি গুড় পাবেন।সকাল সকাল গেলে রসও পাবেন খুব ভালো।বক্রেশ্বরের ছোটো গাড়ী২৭০০-২৮০০/- বড়গাড়ী ৩০০০-৩২০০/-।
তারাপীঠ এ বিভিন্ন দামের অনেক হোটেল, বিশেষ সময় ছাড়া ঘর  পাবার কোনো অসুবিধা হয় না।রিসর্ট গুলো একটু দূরে মন্দির থেকে।মন্দির চত্বরেও অনেক ভালো হোটেল আছে।খাবার জন্যে দেবরাজ রেস্টুরেন্ট ভালো বেশ।নিরামিষ মিল ৬০/-।ভাত, ডাল, ভাজা, সবজী, পাঁপড়, চাটনি।যত খুশী খান।মাছ, ডিম, মাংসও পাবেন।জলখাবারে পুরী সবজী আর ধোসা।
রামপুর হাট স্টেশন থেকে ছোটো অটো ২০০/- বড়ো অটো ৩০০/-, এছাড়া মাথা পিছু ৪০-৫০/- ।তবে অটো ইউনিয়ন ভাড়া বাড়িয়েছে ১০০/- করে।খুব শীঘ্র চালু হয়ে যাবে সেটা।মন্দির এর সামনের মেন রোড এ নোপার্কিং এখন।যারা গাড়ী নিয়ে যাবেন সেই ভাবে প্ল্যান করবেন।
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

No comments

Ads Place