Bengali Travel Blog, Bengali tour itinerary, travel plan,weekend tour from Kolkata,offbeat weekend getaways from Kolkata,weekend destinations from Kolkata,Weekend Destinations Near Kolkata To Go To,weekend destinations near kolkata within 100 kms,weekend destinations kolkata west bengal,best weekend destinations near kolkata,weekend destinations near kolkata by car,weekend destinations near kolkata in summer,offbeat weekend destinations near kolkata,weekend destinations near kolkata in monsoon , weekend destinations near kolkata in rainy season
যাক.. অবশেষে ৭ দিন ছুটি গ্রান্ট হলো।বিয়ের ১ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও ছুটির অভাবে গিন্নী কে নিয়ে কোথাও বেড়াতে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। অবশেষে দীঘা যাওয়া হলো আমাদের।কিন্তু এই পোষ্টে দীঘার আলোচনা করবোনা।
ব্যাপার হলো দীঘা থেকে ফেরার দিন থেকেই মন টা খুব খারাপ লাগছিল.. মনে হচ্ছিলো থেকেই যাই কিন্তু উপায় তো নেই.. ট্রেন এ ফেরার সময়েই কোনো একটা জায়গায় একটা পুরোনো মন্দির চোখে পড়লো... ব্যাস... মাথায় আবার বেড়ানোর পোকা গুলো কিলবিলিয়ে উঠলো। মনে পড়লো ছুটি শেষ হতে এখনও একদিন বাকি.. আবার কবে সুযোগ আসবে জানিনা... একটা রাইড করবোনা? গিন্নী কে এড়িয়েই হোয়াটসঅ্যাপে বিপ্লব কে পিং করলাম "কাল কী করছিস? বিষ্ণুপুর যাবি?" কিছুটা আঁতকে উঠে নিজেকে সামলে জানালো বিকেলে জানাবে.. যাইহোক শেষ অবধি ও জানালো যে যাচ্ছে... মন টা তিড়িং করে উঠলো। গিন্নী এ ব্যাপারে সবসময় আমার পাশেই থাকে। সুতরাং ঠিক হলো পরদিন অর্থাৎ ৯ই মার্চ ভোর ৫ টায় আমরা যাত্রা শুরু করবো। কোনও রকমে বাড়ি ফিরেই আবার ব্যাগ গুছিয়ে রেডি। অতটা জার্নী করে এমনিতেই প্রচন্ড ক্লান্তি তার ওপর পরদিন আবার ভোরে ওঠা। তাই দেরী না করে তাড়াতাড়ি ডিনার করে শুয়ে পড়লাম।
ঠিক ভোর ৩.৪৫ এ অ্যালার্ম টা বেজে উঠলো। ক্লান্তি তখন কোথায়? ঝপাঝপ রেডি হয়ে বাইক স্টার্ট করলাম ৪.৪৫ এ। বিপ্লবরা অপেক্ষা করছিল NH2 আজাদ হিন্দ ধাবায়। ঠিক ৫ টায় আমরা যাত্রা শুরু করলাম NH2 ধরে। ২টো বাইক এ ৩ জন। আমি, বিপ্লব এবং লব..
তখনও আলো ফোটেনি। বেশ কিছুক্ষন বাইক চালানোর পর ডানদিকের লুকিংগ্লাস এ সোনালী সূর্যকে দেখলাম। এ এক অসাধারন অনুভূতি... ভোরে বাইক নিয়ে হাইওয়ে... মিষ্টি হাওয়া.. বসন্তের গন্ধ.. আর সাথে সূর্য উঠতে দেখা... উফ....
বর্ধমান দিয়ে আমরা গিয়েছিলাম... কিন্তু বলে রাখি এই মূহুর্তে দামোদর ব্রিজ এ কাজ চলছে.. সুতরাং ওখানেই আমাদের প্রায় ৩০ মিনিট নষ্ট হলো। যাই হোক.... বাঁকুড়া মোড়ে পৌঁছে আমরা প্রথম দাঁড়ালাম চা পান বিরতির জন্যে... সূর্য তখন বেশ উজ্জ্বল... সাথে ধোঁয়া ওড়া গরম চা.. আর কী চাই... মিনিট দশেক ওখানে থেকে, কিছু ফটো তুলে আমরা আবার রওনা দিলাম.. খুব তাড়াহুড়ো করে যাওয়ার দরকার আমাদের পড়েনি কারণ আমরা ঠিকঠাক টাইম এই এগোচ্ছিলাম। সত্যি বলতে কি শুধু চা দিয়ে ঠিক পেট ভরেনি। আরও এক ঘন্টা চলার পর খিদে টা খুবই চাগার দিলো। রাস্তার পাশেই কোথাও দাঁড়ানো র কথা ভাবছিলাম.. তখনই আমরা একটা ছোটো জঙ্গলের রাস্তায় প্রবেশ করলাম.. সুযোগ হাতছাড়া করা যায়না.. লোভ ও সামলানো গেলোনা। গুগল জানালো জায়গা টা শিবেরবাঁধ বলে একটা জায়গার আশেপাশে। বেশ অনেকটা সময় এখানে গেলো। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফটোগ্রাফার দের মতো একটা অনুভুতি এলো.. যা যা সামনে পেলাম, কম বেশি সব ই লেন্স বন্দি করে নিলাম... বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া কিছু হালকা টিফিন করেই আবার আমরা রওনা দিলাম... বিষ্ণুপুর তখনও প্রায় ৩০ কিমি। অসাধারন রাস্তা.. জঙ্গল এর বুক চিরে সূর্যের আলো ঠিকরে পড়ছে আমাদের শরীর, বাইক, রাস্তায়... অতটা ভালো রাস্তা আশাই করিনি। একটু আনমনাই হয়ে গিয়েছিলাম.. সত্যি বলতে কি প্রকৃতির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম.. বাইক এর স্পীডোমিটারের কাঁটা যে কখন ১০০ ছাড়িয়ে গেছে টের ই পাইনি.. হুঁশ ফিরলো যখন, লুকিংগ্লাস এ দেখি বিপ্লব নেই... গতি অনেক কমালাম কিন্তু বেশ কিছুক্ষণ হয়ে যাওয়ার পরেও বিপ্লবের দেখা না পেয়ে বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লাম... ও কি তাহলে কোথাও দাঁড়ালো? কিন্তু এখন তো আমাদের আর দাঁড়ানোর কথা ছিলোনা... তাহলে কি বাইক এ কিছু সমস্যা হলো? ফোন করলাম... সাথে সাথেই ফোন রিসিভ করলো.. বুঝলাম ফোন ওর হাতেই আছে। জানালো রাস্তার পাশে কিছু পলাশ গাছ ফুলে ফুলে লাল হয়ে যেনো ওকে নাকি ডাকছিলো... ও নাকি সেই ডাক আর এড়াতে পারেনি... বুঝলাম আমি কি মিস করেছি... মিনিট পাঁচেক মন ভরে ফটো তুলে বিপ্লব ফিরে এলে যাত্রা আবার শুরু হলো... রাস্তার তারিফ না করলে সত্যই চলেনা..
আমরা প্রথম পৌঁছলাম মদনমোহন মন্দির তখন ঘড়িতে ৯ টা.. উদ্দেশ্য ছিল যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব যতোটা বেশি করে ঘুরে নেওয়া যায়.. কারন আমাদের সেদিন ই ফিরতে হবে... এভাবে আমরা রাসমঞ্চ, দলমাদল কামান, জোড়া মন্দির, নন্দলাল মন্দির, গুমঘর, শ্যামরাই মন্দির, ছিন্নমস্তা মন্দির, রাধাশ্যাম মন্দির, গড় দরজা ইত্যাদি জায়গা ঘুরলাম। বেলা তখন বেশ গড়িয়েছে। এই বসন্তেও সূর্য আমাদের পুড়িয়ে দিচ্ছিল। তবে প্রখর সূর্যের আলোয় মন্দিরের টেরাকোটার কাজ গুলোর সৌন্দর্যের বর্ণনা ভাষায় করা যায়না.. একদম ঝকঝকে.. বিষ্ণুপুর এসে মাটির কিছু জিনিস না নিয়ে গেলে কি হয়? পোড়ামাটির কিছু গয়না, পোড়ামাটির শঙ্খ, আরও কিছু টুকটাক জিনিস কিনলাম.. আসলে জায়গাটার প্রতিটি কোনে, প্রতিটি ইঞ্চি তে ইতিহাস যেনো কথা বলে.. মন্দিরের দেওয়ালে কান পাতলে যেন মনে হয় ওরা ফিসফিস করে অনেক কিছুই বলতে চাইছে.. নিশ্বাস নিচ্ছে.. আমার মত অজ্ঞ রা কিছুই হয়তো বুঝিনা। কিন্তু কিছু তো বলেই...
মন আরও চাইছিল কিন্তু পেট কে আর মনের কথা বোঝানো যাচ্ছিলোনা... বেচারার আর দোষ কী... সকাল থেকে তো সেই অর্থে পানি পড়লেও দানা কিছুই পড়েনি.. স্থানীয় এক হোটেলে শাল পাতায় ভাত, আলু ভাজা, ফুলকপির তরকারি, আলু পোস্ত, ডিম ভাজা, চাটনি সহযোগে বেশ জমিয়ে খাওয়াদাওয়া সেরে ঠিক করলাম এবার আমাদের বাড়ির পথে রওনা দেওয়া উচিত.. ঘড়িতে তখন বেলা ২ টা বাজে... বিষ্ণুপুর এ এরকম অজস্র ইতিহাস লুকোনো আছে.. একদিনে ওই টুকু সময়ে আমরা পুরোটা কভার করতেও পারিনি.. পরে আবার কোনো এক সময়ে নাহয় বাকি গুলো দেখতে আসব.. কিছু কিছু সময়ে মনে হয় পুরোটা না হওয়াই ভালো.. তাতে ভালোবাসা কমে যায়...
যাই হোক.. আমাদের প্ল্যান ছিল জয়পুর জঙ্গল হয়ে ফেরার.. কিন্তু গুগল আগে থেকেই বলছিল যে রাস্তায় কিছু সমস্যা চলছে.. তাই ঝুকি না নিয়ে একটু সকাল সকাল বেরিয়ে পড়ব... আর যারা আগে ভায়া আরামবাগ বাঁকুড়া গেছেন তারা জানেন যে এই রাস্তায় ট্রাফিক কিভাবে চলে... প্রচুর লরি, বাস... এবং তারা সবাই নিজের মতো চালায়.. আপনাকে আপনার টা ভেবে গাড়ি চালাতে হবে... আর তার ওপর ১০০ মিটার অন্তর অন্তর একসাথে ১২ টা করে স্পিড ব্রেকার... আর সাথে জয়পুর জঙ্গল রাস্তা প্রায় পুরোটাই খারাপ বিষ্ণুপুর পর্যন্ত... বিশ্বাস করুন ফেরার সময়ে খুব কষ্ট হয়েছে... যারা চার চাকা তে যাবেন তাদের জন্য ঠিক আছে কিন্তু যারা বাইক এ যাবেন ভাবছেন প্লিজ NH2 হয়ে যান...
ফেরার পথে বনলতা রিসর্টে একটু বিশ্রাম নিয়ে আবার বাইক স্টার্ট করলাম... শুরু হলো বাড়ি ফেরার পালা... মন কেমনের পালা... আর সাথে অপেক্ষার পালা... আবার কবে......
ব্যাপার হলো দীঘা থেকে ফেরার দিন থেকেই মন টা খুব খারাপ লাগছিল.. মনে হচ্ছিলো থেকেই যাই কিন্তু উপায় তো নেই.. ট্রেন এ ফেরার সময়েই কোনো একটা জায়গায় একটা পুরোনো মন্দির চোখে পড়লো... ব্যাস... মাথায় আবার বেড়ানোর পোকা গুলো কিলবিলিয়ে উঠলো। মনে পড়লো ছুটি শেষ হতে এখনও একদিন বাকি.. আবার কবে সুযোগ আসবে জানিনা... একটা রাইড করবোনা? গিন্নী কে এড়িয়েই হোয়াটসঅ্যাপে বিপ্লব কে পিং করলাম "কাল কী করছিস? বিষ্ণুপুর যাবি?" কিছুটা আঁতকে উঠে নিজেকে সামলে জানালো বিকেলে জানাবে.. যাইহোক শেষ অবধি ও জানালো যে যাচ্ছে... মন টা তিড়িং করে উঠলো। গিন্নী এ ব্যাপারে সবসময় আমার পাশেই থাকে। সুতরাং ঠিক হলো পরদিন অর্থাৎ ৯ই মার্চ ভোর ৫ টায় আমরা যাত্রা শুরু করবো। কোনও রকমে বাড়ি ফিরেই আবার ব্যাগ গুছিয়ে রেডি। অতটা জার্নী করে এমনিতেই প্রচন্ড ক্লান্তি তার ওপর পরদিন আবার ভোরে ওঠা। তাই দেরী না করে তাড়াতাড়ি ডিনার করে শুয়ে পড়লাম।
ঠিক ভোর ৩.৪৫ এ অ্যালার্ম টা বেজে উঠলো। ক্লান্তি তখন কোথায়? ঝপাঝপ রেডি হয়ে বাইক স্টার্ট করলাম ৪.৪৫ এ। বিপ্লবরা অপেক্ষা করছিল NH2 আজাদ হিন্দ ধাবায়। ঠিক ৫ টায় আমরা যাত্রা শুরু করলাম NH2 ধরে। ২টো বাইক এ ৩ জন। আমি, বিপ্লব এবং লব..
তখনও আলো ফোটেনি। বেশ কিছুক্ষন বাইক চালানোর পর ডানদিকের লুকিংগ্লাস এ সোনালী সূর্যকে দেখলাম। এ এক অসাধারন অনুভূতি... ভোরে বাইক নিয়ে হাইওয়ে... মিষ্টি হাওয়া.. বসন্তের গন্ধ.. আর সাথে সূর্য উঠতে দেখা... উফ....
বর্ধমান দিয়ে আমরা গিয়েছিলাম... কিন্তু বলে রাখি এই মূহুর্তে দামোদর ব্রিজ এ কাজ চলছে.. সুতরাং ওখানেই আমাদের প্রায় ৩০ মিনিট নষ্ট হলো। যাই হোক.... বাঁকুড়া মোড়ে পৌঁছে আমরা প্রথম দাঁড়ালাম চা পান বিরতির জন্যে... সূর্য তখন বেশ উজ্জ্বল... সাথে ধোঁয়া ওড়া গরম চা.. আর কী চাই... মিনিট দশেক ওখানে থেকে, কিছু ফটো তুলে আমরা আবার রওনা দিলাম.. খুব তাড়াহুড়ো করে যাওয়ার দরকার আমাদের পড়েনি কারণ আমরা ঠিকঠাক টাইম এই এগোচ্ছিলাম। সত্যি বলতে কি শুধু চা দিয়ে ঠিক পেট ভরেনি। আরও এক ঘন্টা চলার পর খিদে টা খুবই চাগার দিলো। রাস্তার পাশেই কোথাও দাঁড়ানো র কথা ভাবছিলাম.. তখনই আমরা একটা ছোটো জঙ্গলের রাস্তায় প্রবেশ করলাম.. সুযোগ হাতছাড়া করা যায়না.. লোভ ও সামলানো গেলোনা। গুগল জানালো জায়গা টা শিবেরবাঁধ বলে একটা জায়গার আশেপাশে। বেশ অনেকটা সময় এখানে গেলো। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফটোগ্রাফার দের মতো একটা অনুভুতি এলো.. যা যা সামনে পেলাম, কম বেশি সব ই লেন্স বন্দি করে নিলাম... বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া কিছু হালকা টিফিন করেই আবার আমরা রওনা দিলাম... বিষ্ণুপুর তখনও প্রায় ৩০ কিমি। অসাধারন রাস্তা.. জঙ্গল এর বুক চিরে সূর্যের আলো ঠিকরে পড়ছে আমাদের শরীর, বাইক, রাস্তায়... অতটা ভালো রাস্তা আশাই করিনি। একটু আনমনাই হয়ে গিয়েছিলাম.. সত্যি বলতে কি প্রকৃতির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম.. বাইক এর স্পীডোমিটারের কাঁটা যে কখন ১০০ ছাড়িয়ে গেছে টের ই পাইনি.. হুঁশ ফিরলো যখন, লুকিংগ্লাস এ দেখি বিপ্লব নেই... গতি অনেক কমালাম কিন্তু বেশ কিছুক্ষণ হয়ে যাওয়ার পরেও বিপ্লবের দেখা না পেয়ে বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লাম... ও কি তাহলে কোথাও দাঁড়ালো? কিন্তু এখন তো আমাদের আর দাঁড়ানোর কথা ছিলোনা... তাহলে কি বাইক এ কিছু সমস্যা হলো? ফোন করলাম... সাথে সাথেই ফোন রিসিভ করলো.. বুঝলাম ফোন ওর হাতেই আছে। জানালো রাস্তার পাশে কিছু পলাশ গাছ ফুলে ফুলে লাল হয়ে যেনো ওকে নাকি ডাকছিলো... ও নাকি সেই ডাক আর এড়াতে পারেনি... বুঝলাম আমি কি মিস করেছি... মিনিট পাঁচেক মন ভরে ফটো তুলে বিপ্লব ফিরে এলে যাত্রা আবার শুরু হলো... রাস্তার তারিফ না করলে সত্যই চলেনা..
আমরা প্রথম পৌঁছলাম মদনমোহন মন্দির তখন ঘড়িতে ৯ টা.. উদ্দেশ্য ছিল যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব যতোটা বেশি করে ঘুরে নেওয়া যায়.. কারন আমাদের সেদিন ই ফিরতে হবে... এভাবে আমরা রাসমঞ্চ, দলমাদল কামান, জোড়া মন্দির, নন্দলাল মন্দির, গুমঘর, শ্যামরাই মন্দির, ছিন্নমস্তা মন্দির, রাধাশ্যাম মন্দির, গড় দরজা ইত্যাদি জায়গা ঘুরলাম। বেলা তখন বেশ গড়িয়েছে। এই বসন্তেও সূর্য আমাদের পুড়িয়ে দিচ্ছিল। তবে প্রখর সূর্যের আলোয় মন্দিরের টেরাকোটার কাজ গুলোর সৌন্দর্যের বর্ণনা ভাষায় করা যায়না.. একদম ঝকঝকে.. বিষ্ণুপুর এসে মাটির কিছু জিনিস না নিয়ে গেলে কি হয়? পোড়ামাটির কিছু গয়না, পোড়ামাটির শঙ্খ, আরও কিছু টুকটাক জিনিস কিনলাম.. আসলে জায়গাটার প্রতিটি কোনে, প্রতিটি ইঞ্চি তে ইতিহাস যেনো কথা বলে.. মন্দিরের দেওয়ালে কান পাতলে যেন মনে হয় ওরা ফিসফিস করে অনেক কিছুই বলতে চাইছে.. নিশ্বাস নিচ্ছে.. আমার মত অজ্ঞ রা কিছুই হয়তো বুঝিনা। কিন্তু কিছু তো বলেই...
মন আরও চাইছিল কিন্তু পেট কে আর মনের কথা বোঝানো যাচ্ছিলোনা... বেচারার আর দোষ কী... সকাল থেকে তো সেই অর্থে পানি পড়লেও দানা কিছুই পড়েনি.. স্থানীয় এক হোটেলে শাল পাতায় ভাত, আলু ভাজা, ফুলকপির তরকারি, আলু পোস্ত, ডিম ভাজা, চাটনি সহযোগে বেশ জমিয়ে খাওয়াদাওয়া সেরে ঠিক করলাম এবার আমাদের বাড়ির পথে রওনা দেওয়া উচিত.. ঘড়িতে তখন বেলা ২ টা বাজে... বিষ্ণুপুর এ এরকম অজস্র ইতিহাস লুকোনো আছে.. একদিনে ওই টুকু সময়ে আমরা পুরোটা কভার করতেও পারিনি.. পরে আবার কোনো এক সময়ে নাহয় বাকি গুলো দেখতে আসব.. কিছু কিছু সময়ে মনে হয় পুরোটা না হওয়াই ভালো.. তাতে ভালোবাসা কমে যায়...
যাই হোক.. আমাদের প্ল্যান ছিল জয়পুর জঙ্গল হয়ে ফেরার.. কিন্তু গুগল আগে থেকেই বলছিল যে রাস্তায় কিছু সমস্যা চলছে.. তাই ঝুকি না নিয়ে একটু সকাল সকাল বেরিয়ে পড়ব... আর যারা আগে ভায়া আরামবাগ বাঁকুড়া গেছেন তারা জানেন যে এই রাস্তায় ট্রাফিক কিভাবে চলে... প্রচুর লরি, বাস... এবং তারা সবাই নিজের মতো চালায়.. আপনাকে আপনার টা ভেবে গাড়ি চালাতে হবে... আর তার ওপর ১০০ মিটার অন্তর অন্তর একসাথে ১২ টা করে স্পিড ব্রেকার... আর সাথে জয়পুর জঙ্গল রাস্তা প্রায় পুরোটাই খারাপ বিষ্ণুপুর পর্যন্ত... বিশ্বাস করুন ফেরার সময়ে খুব কষ্ট হয়েছে... যারা চার চাকা তে যাবেন তাদের জন্য ঠিক আছে কিন্তু যারা বাইক এ যাবেন ভাবছেন প্লিজ NH2 হয়ে যান...
ফেরার পথে বনলতা রিসর্টে একটু বিশ্রাম নিয়ে আবার বাইক স্টার্ট করলাম... শুরু হলো বাড়ি ফেরার পালা... মন কেমনের পালা... আর সাথে অপেক্ষার পালা... আবার কবে......
আমাদের এই ভ্রমণ কাহিনীর একটা ছোট্ট ভিডিও তৈরী করেছি.... যদি সময় পান পুরোটা দেখার অনুরোধ রইলো.. কথা দিলাম প্রেমে পড়ে যাবেন
কিছু ছবি দিলাম ,দেখবেন। প্রফেশনাল নই,যদি কিছু ভুল হয়ে থাকে মার্জনা করবেন,ভালো থাকবেন।সাবধানে থাকবেন।
COMMENTS